সৌদি আরবের ভাইরাল সান্ডা আসলে কি

- আপডেট সময় : ০৮:৪৯:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
- / ৩৫ বার পড়া হয়েছে
সারা পৃথিবী জুড়েই ট্রেন্ডিং যে কোন কিছু আমরা মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে জানতে পারি। ঠিক তেমনি সৌদি আরবের ভাইরাল সান্ডা সম্পর্কে ইতিমধ্যেই আমরা দেখেছি। অনেকেই হয়তোবা এ সম্পর্কিত Meme কিংবা ভিডিও দেখলেই এর সারমর্ম বুঝতে পারেননি। তাদেরকে আজকে জানাবো Sanda কি এবং এটি কেন এত জনপ্রিয় হয়েছে।
টিকটিকি বা সরীসৃপ জাতীয় একটি প্রাণী হচ্ছে সান্ডা যার বৈজ্ঞানিক নাম Uromastyx. সান্ডা দেখতে প্রায় গুই সাপের মত। তবে তুলনামূলকভাবে এটি বেশ ছোট এবং মোটা প্রকৃতির। এর লেজ রয়েছে খাঁজ যেটি মূলত আত্মরক্ষার কাজে ব্যবহার করে থাকে। এছাড়াও এটিকে মাস্টিগুর বা কাটা যুক্ত টিকটিকি নামেও ডাকা হয়ে থাকে।
সান্ডা কোথায় বাস করে
মূলত মধ্যপ্রাচ্যের মরুভূমি অঞ্চল এবং আফ্রিকার এলাকাগুলোতে এই প্রাণীটি পাওয়া যায়। গুইসাপ পোকামাকড় অর্থাৎ মাংসাশী হলেও সান্ডা পুরোপুরি ভাবে তৃণভোজী। অর্থাৎ বেচে থাকার জন্য শুধুমাত্র গাছপালা, ফুল এবং বিভিন্ন ধরনের বীজ খায়। তবে অনেক জাতের সান্ডাকে কিছু কিছু পোকামাকড়ও খেতে দেখা যায়।
সান্ডা ভাইরাল কেন এত
যদিও এই প্রাণীটির অনেক আগে থেকেই দেখা যায় তবুও বেশ কিছুদিন ধরে এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে। বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা যায় আরবের লোকেরা সান্ডার বিরিয়ানি খাচ্ছে। কেউ কেউ মরুভূমিতে দৌড়াচ্ছে সানডা ধরার জন্য। বিভিন্ন পোস্ট হচ্ছে যে আরেকটু গরম পড়লে কাফিলের ছেলের সাথে সানডা খেতে পারবো। কেউ কেউ বলছে এবার সান্ডা না পেলে ভিসা ক্যানসেল হয়ে যাবে।
এই কৌতুক গুলোর পেছনেও রয়েছে কারণ। বিদেশে অবস্থানরত বেশ কিছু কর্মজীবীরা সান্ডার বিরিয়ানি ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার পর সেগুলো ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়। আর মানুষও এটি শেয়ার করতে থাকে। ইন্টারনেটে ফেসবুক হোক বা টিকটক হোক চার পাঁচটি ভিডিও দেখলেই একটি সানডার ভিডিও পাওয়া যায়। এমনকি অনেক জনপ্রিয় ইনফ্লুয়েন্সাররাও এ নিয়ে পোস্ট করছে।
সান্ডার তেল কি আসলেই উপকারী
ভাইরাল বিরিয়ানির পাশাপাশি আরও একটি কথা শোনা যাচ্ছে যে সান্ডার তেল বেশ উপকারী। শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সহ আয়ুর্বেদিক নানা চিকিৎসায় নাকি এটি ব্যবহৃত হয়। যদিও বিজ্ঞানসম্মতভাবে এর কার্যকারিতা প্রমাণিত নয় তবুও বিভিন্ন বাজারে এর বেশ চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ ভারত পাকিস্তান সহ বেশ কিছু দেশের স্থানীয় হাট বাজারগুলোতে পাওয়া যায় সান্ডার তেল।
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে সান্ডা খাওয়া কি হালাল
সান্ডার আরো একটি নাম হচ্ছে দব। আমি আবারো বলে রাখছি গুইসাপ আর সান্ডা সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রকৃতি। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো দব বা সান্ডা খাননি। তবে অন্যদেরকে সানডা খাওয়ার বিষয়ে নিষেধও করেননি। অনেক আলেমগণ সানডা খাওয়া কে মাকরুহ বলে থাকেন। তবে হানাফী মাযহাব অনুযায়ী এটি খাওয়া হারাম। অন্য মাজহাব অনুযায়ী দব বা সান্ডা খাওয়া যাবে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আমরা অনেক কিছুই দেখে থাকি। ঘরে বসে এ সকল ভিডিও বা রিলস থেকে আমাদের বিনোদনের অংশ হলেও এর পেছনে অনেক সময় লুকিয়ে থাকে নানা কষ্ট। একটু গভীরভাবে যদি আমরা চিন্তা করি তাহলেই বুঝতে পারব। অসংখ্য প্রবাসী মরুভূমিতে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করার জন্য সানদাবা এই টিকটিকি ধরার জন্য দৌড়ে বেড়াচ্ছে। আমাদের উচিত তাদের এই কাজের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।