বাংলাদেশ ১১:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এনজিওর শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের কাজ কি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৭:২৫:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • / ৬৯ বার পড়া হয়েছে

এনজিও কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের কাজ

বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে এনজিও প্রতিষ্ঠানে চাকরির জনপ্রিয়তা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। এরকারণ হচ্ছে উচ্চ বেতন এবং নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা জানবো বিভিন্ন এনজিও ও গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের (grameen bank trainee manager) কাজকে কি সে ব্যাপারে। ইতিমধ্যে এই ধরনের পদে গ্রামীন ব্যাংকে একটি সার্কুলার প্রকাশিত হয়েছিল এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সামনে আরো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে।

মূলত এই পোস্টে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অভিজ্ঞতাহীন বা ফ্রেশারদের (fresher) আবেদন করার সুযোগ প্রদান দেওয়া হয়। যার কারণে অনেকেই হয়তো যথাযথ কাজের দায়িত্ব সম্পর্কে জানেন না। তাই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং জেনে নিন এই পদের কাজ এবং দায়িত্ব কি কি।

আমরা জানি ব্যবস্থাপনা এর ইংরেজি শব্দ হচ্ছে ম্যানেজমেন্ট (Management)। আমি খুঁটিনাটির সকল বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করব কারণ ভাইভাতে এ সম্পর্কিত প্রশ্ন আসতে পারে। তাই আর্টিকেল কিছুটা বড় হতে পারে। যাইহোক ম্যানেজমেন্টের কাজ সম্পর্কে হয়তোবা আমাদের ধারণা রয়েছে। অর্থাৎ কোন প্রতিষ্ঠানের সকল কাজের তদারকি করায় হচ্ছে ম্যানেজমেন্টের অংশ। প্রায় সকল ধরনের কোম্পানি বা ইনস্টিটিউটে ম্যানেজার পদ থাকে।

শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপক বা ট্রেইনি ম্যানেজারের (Trainee Manager Work) প্রধান কাজ হচ্ছে দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠান সকল কাজ তদারকি করা। চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নেই।

এনজিও শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের কাজ

এনজিও এর পূর্ণরূপ হচ্ছে নন গভর্মেন্ট অর্গানাইজেশন (Non Govermental Organization)। অর্থাৎ এটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সাধারণত প্রতিটি এনজিওরই দেশের বিভিন্ন স্থানে শাখা বা কেন্দ্র থাকে। এ শাখা গুলোর মাধ্যমে স্থানীয় জনগণকে বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করা হয়। সকল এনজিও আবার যে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে কিংবা আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করে বিষয়টি তা নয়। দেশি এবং বিদেশি অনেক এনজিও আছে যারা জনগণের স্বাস্থ্য, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা ইত্যাদি সেবাও প্রদান করে থাকে। যেমন গ্রামীণ ব্যাংক (grameen Bank), ব্যুরো বাংলাদেশ (BURO Bangladesh), সেবা (SEBA) ইত্যাদি দেশের বিভিন্ন জায়গায় দ্রুত জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষুদ্র ঋণ ও অন্যান্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। আবার অনেক এনজিও হয়েছে যেমন সেভ দ্যা চিলড্রেন  (Save The Children), ইউনিসেফ (Unicef) ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলি মা, শিশু এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যেও চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকে।

তবে প্রতিষ্ঠানের ধরন যাই হোক না কেন শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের কাজ মোটামুটি একই ধরনের। নিচের পয়েন্ট গুলো পড়লে আপনারা বুঝতে পারবেন যে কি কি দায়িত্ব পালন করতে হয়।

• সকল ধরনের কার্যক্রমের প্ল্যান  (Plan) বা পরিকল্পনা করা। চিকিৎসা বা আর্থিক সেবা প্রদান বা কার্যক্রম যাই হোক না কেন সেগুলো কিভাবে পরিচালিত হবে তা আগে থেকেই নির্ধারণ করা একজন ম্যানেজারের কাজ।

• সাধারণত একটি কেন্দ্রের প্রধান হিসেবে একজন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করে। এখানে ম্যানেজার শব্দটি ব্যবস্থাপকের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে। আর সেই কেন্দ্রের অধীনস্থ যত সকল কর্মচারী আছে তাদের সকল কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করাও এই পদের কাজ। অর্থাৎ অধীনস্তরা কে কি করছে বা কার কি দায়িত্ব এবং সকল সবাইকে কাজ সঠিকভাবে করতে পারছে কিনা সেগুলো তদারকি করতে হবে।

• এনজিও বা গ্রামীণ ব্যাংকের কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের আরো একটি অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে লোন প্রদানের সময় গ্রাহকের সকল তথ্য সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করে নিশ্চিত হওয়া। অর্থাৎ যখন কোন ক্ষুদ্র ঋণ (Mini Loan) বিতরণ করা হয় তখন সেই গ্রাহক ঋণগ্রহণের উপযোগী কিনা তা যাচাই করতে হবে। যেমন: ওই গ্রাহক অতীতে লোন নিয়ে সঠিকভাবে পরিশোধ করেছে কিনা, পরিচয় ঠিক আছে কিনা ইত্যাদি।

• লোন প্রদানের পর অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে সেই লোন যথাসময়ে আদায় করা। যেটাকে আমরা স্থানীয় ভাষায় কিস্তি আদায় বলে থাকি। অনেক সময় মাঠকর্মকর্তারা যদি লোন আদায়ের ব্যর্থ হয় তাহলে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

• কেন্দ্রের যে সকল কর্মচারী আছে তাদের মধ্যে যথাযথ কর্মশৃঙ্খলা এবং সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ বজায় রাখা। সেই সাথে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে যথাযথ রিপোর্ট প্রদান করা।

• প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতির জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

• কর্মচারীদের কাজের পারফরম্যান্স যাচাই করে সেগুলোও কর্তৃপক্ষকে প্রেরণ করতে হয়।

শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপক হওয়ার যোগ্যতা

সাধারণত বিভিন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এনালাইসিস করে দেখা গিয়েছে যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনার্স বা সমমান এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাস্টার ডিগ্রী যোগ্যতা যাওয়া হয়ে থাকে এই পদে যোগদানের জন্য। শিক্ষানবিশ বা ট্রেইনি পদ গুলোতে কোন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। আর সরাসরি ম্যানেজার বা ব্যবস্থাপনা যোগদান করার জন্য কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়।

এখানে শিক্ষানবিশ বা ট্রেইনি পদগুলোতে মূলত কাজ শেখার সুযোগ দেওয়া হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত ভাবে যখন একজন চাকরির প্রত্যাশী নিয়োগ পায় তখন তাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এনজিও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। তারপর প্রশিক্ষণ শেষে উক্ত এনজিওর কোন একটি শাখায় তার পোস্টিং দেওয়া হয়। প্রথম দিকে সে প্রবেশনারী বা শিক্ষানবিশ ম্যানেজার হিসেবে কাজ করে। এ সময়টাতে তাকে বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পর্কে শেখানো হয় বা ধারণা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে প্রবেশনারী পিরিয়ড বা শিক্ষানবিশ চাকরি যেটা সাধারণত ৬ মাস থেকে ১ বছর হয়ে থাকে সেটি শেষ হলে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা

দায়িত্ব ও যোগ্যতা সম্পর্কে তো অনেক বললাম। এবার চলুন এই চাকুরী সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জেনে নেই। বাংলাদেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন এনজিও ইনস্টিটিউটে সাধারণত এই পদে ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন প্রদান করা হয়। তবে কোনো কোনো প্রদর্শনে বেতনের পরিমাণ এর থেকেও বেশি হয়ে থাকে।

প্রতিমাসে এই নির্ধারিত বেতন ছাড়াও একজন শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ভাতা পেয়ে থাকেন। যার মধ্যে রয়েছে গ্র্যাচুইটি সুবিধা, দূরত্ব ভাতা ইত্যাদি। এমনকি চাকুরী জীবন শেষ করার পরে প্রভিডেন্ট ফান্ডের এককালীন টাকারও ব্যবস্থা রয়েছে। মেয়ে প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সাধারণত নিজ এলাকায় পোস্টিং হলেও ছেলে-প্রার্থীদের ক্ষেত্রে পোস্টিং কিছুটা দূরে হয়। আর এই দূরে পোস্টিং হওয়ার কারণে সাধারণত দূরত্ব  প্রদান করা হয়। যেটি বেতনের সাথে বাড়তি যোগ করা হয়।

আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন বিভিন্ন এনজিওর সহ গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের কাজ কি। উত্তর পদে যোগদানের পর যোগ্যতা এবং দক্ষতার সাপেক্ষে ভবিষ্যতে প্রমোশনেরও সুযোগ রয়েছে। এর মাধ্যমে একজন প্রার্থী ভবিষ্যতে এরিয়া ম্যানেজার, জোনাল ম্যানেজার সহ প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহে নিয়োগ পেতে পারে। তবে তার জন্য অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। সেই সাথে এক এলাকায় কয়েক বছর চাকরির পর অন্য এলাকায় পোস্টিং নেওয়ার সুবিধা তো আছেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

এনজিওর শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের কাজ কি

আপডেট সময় : ০৭:২৫:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে এনজিও প্রতিষ্ঠানে চাকরির জনপ্রিয়তা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। এরকারণ হচ্ছে উচ্চ বেতন এবং নানা ধরনের সুযোগ সুবিধা। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা জানবো বিভিন্ন এনজিও ও গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের (grameen bank trainee manager) কাজকে কি সে ব্যাপারে। ইতিমধ্যে এই ধরনের পদে গ্রামীন ব্যাংকে একটি সার্কুলার প্রকাশিত হয়েছিল এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সামনে আরো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে।

মূলত এই পোস্টে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে অভিজ্ঞতাহীন বা ফ্রেশারদের (fresher) আবেদন করার সুযোগ প্রদান দেওয়া হয়। যার কারণে অনেকেই হয়তো যথাযথ কাজের দায়িত্ব সম্পর্কে জানেন না। তাই পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং জেনে নিন এই পদের কাজ এবং দায়িত্ব কি কি।

আমরা জানি ব্যবস্থাপনা এর ইংরেজি শব্দ হচ্ছে ম্যানেজমেন্ট (Management)। আমি খুঁটিনাটির সকল বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করব কারণ ভাইভাতে এ সম্পর্কিত প্রশ্ন আসতে পারে। তাই আর্টিকেল কিছুটা বড় হতে পারে। যাইহোক ম্যানেজমেন্টের কাজ সম্পর্কে হয়তোবা আমাদের ধারণা রয়েছে। অর্থাৎ কোন প্রতিষ্ঠানের সকল কাজের তদারকি করায় হচ্ছে ম্যানেজমেন্টের অংশ। প্রায় সকল ধরনের কোম্পানি বা ইনস্টিটিউটে ম্যানেজার পদ থাকে।

শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপক বা ট্রেইনি ম্যানেজারের (Trainee Manager Work) প্রধান কাজ হচ্ছে দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠান সকল কাজ তদারকি করা। চলুন এবার বিস্তারিত জেনে নেই।

এনজিও শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের কাজ

এনজিও এর পূর্ণরূপ হচ্ছে নন গভর্মেন্ট অর্গানাইজেশন (Non Govermental Organization)। অর্থাৎ এটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। সাধারণত প্রতিটি এনজিওরই দেশের বিভিন্ন স্থানে শাখা বা কেন্দ্র থাকে। এ শাখা গুলোর মাধ্যমে স্থানীয় জনগণকে বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করা হয়। সকল এনজিও আবার যে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে কিংবা আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করে বিষয়টি তা নয়। দেশি এবং বিদেশি অনেক এনজিও আছে যারা জনগণের স্বাস্থ্য, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা ইত্যাদি সেবাও প্রদান করে থাকে। যেমন গ্রামীণ ব্যাংক (grameen Bank), ব্যুরো বাংলাদেশ (BURO Bangladesh), সেবা (SEBA) ইত্যাদি দেশের বিভিন্ন জায়গায় দ্রুত জনগোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষুদ্র ঋণ ও অন্যান্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। আবার অনেক এনজিও হয়েছে যেমন সেভ দ্যা চিলড্রেন  (Save The Children), ইউনিসেফ (Unicef) ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানগুলি মা, শিশু এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যেও চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকে।

তবে প্রতিষ্ঠানের ধরন যাই হোক না কেন শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের কাজ মোটামুটি একই ধরনের। নিচের পয়েন্ট গুলো পড়লে আপনারা বুঝতে পারবেন যে কি কি দায়িত্ব পালন করতে হয়।

• সকল ধরনের কার্যক্রমের প্ল্যান  (Plan) বা পরিকল্পনা করা। চিকিৎসা বা আর্থিক সেবা প্রদান বা কার্যক্রম যাই হোক না কেন সেগুলো কিভাবে পরিচালিত হবে তা আগে থেকেই নির্ধারণ করা একজন ম্যানেজারের কাজ।

• সাধারণত একটি কেন্দ্রের প্রধান হিসেবে একজন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করে। এখানে ম্যানেজার শব্দটি ব্যবস্থাপকের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে। আর সেই কেন্দ্রের অধীনস্থ যত সকল কর্মচারী আছে তাদের সকল কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করাও এই পদের কাজ। অর্থাৎ অধীনস্তরা কে কি করছে বা কার কি দায়িত্ব এবং সকল সবাইকে কাজ সঠিকভাবে করতে পারছে কিনা সেগুলো তদারকি করতে হবে।

• এনজিও বা গ্রামীণ ব্যাংকের কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের আরো একটি অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে লোন প্রদানের সময় গ্রাহকের সকল তথ্য সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করে নিশ্চিত হওয়া। অর্থাৎ যখন কোন ক্ষুদ্র ঋণ (Mini Loan) বিতরণ করা হয় তখন সেই গ্রাহক ঋণগ্রহণের উপযোগী কিনা তা যাচাই করতে হবে। যেমন: ওই গ্রাহক অতীতে লোন নিয়ে সঠিকভাবে পরিশোধ করেছে কিনা, পরিচয় ঠিক আছে কিনা ইত্যাদি।

• লোন প্রদানের পর অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে সেই লোন যথাসময়ে আদায় করা। যেটাকে আমরা স্থানীয় ভাষায় কিস্তি আদায় বলে থাকি। অনেক সময় মাঠকর্মকর্তারা যদি লোন আদায়ের ব্যর্থ হয় তাহলে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

• কেন্দ্রের যে সকল কর্মচারী আছে তাদের মধ্যে যথাযথ কর্মশৃঙ্খলা এবং সুষ্ঠু কাজের পরিবেশ বজায় রাখা। সেই সাথে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে যথাযথ রিপোর্ট প্রদান করা।

• প্রতিষ্ঠানের অগ্রগতির জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

• কর্মচারীদের কাজের পারফরম্যান্স যাচাই করে সেগুলোও কর্তৃপক্ষকে প্রেরণ করতে হয়।

শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপক হওয়ার যোগ্যতা

সাধারণত বিভিন্ন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এনালাইসিস করে দেখা গিয়েছে যে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনার্স বা সমমান এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে মাস্টার ডিগ্রী যোগ্যতা যাওয়া হয়ে থাকে এই পদে যোগদানের জন্য। শিক্ষানবিশ বা ট্রেইনি পদ গুলোতে কোন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। আর সরাসরি ম্যানেজার বা ব্যবস্থাপনা যোগদান করার জন্য কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ বছরের অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়।

এখানে শিক্ষানবিশ বা ট্রেইনি পদগুলোতে মূলত কাজ শেখার সুযোগ দেওয়া হয়। বিভিন্ন পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত ভাবে যখন একজন চাকরির প্রত্যাশী নিয়োগ পায় তখন তাকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এনজিও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। তারপর প্রশিক্ষণ শেষে উক্ত এনজিওর কোন একটি শাখায় তার পোস্টিং দেওয়া হয়। প্রথম দিকে সে প্রবেশনারী বা শিক্ষানবিশ ম্যানেজার হিসেবে কাজ করে। এ সময়টাতে তাকে বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পর্কে শেখানো হয় বা ধারণা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে প্রবেশনারী পিরিয়ড বা শিক্ষানবিশ চাকরি যেটা সাধারণত ৬ মাস থেকে ১ বছর হয়ে থাকে সেটি শেষ হলে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা

দায়িত্ব ও যোগ্যতা সম্পর্কে তো অনেক বললাম। এবার চলুন এই চাকুরী সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জেনে নেই। বাংলাদেশের স্বনামধন্য বিভিন্ন এনজিও ইনস্টিটিউটে সাধারণত এই পদে ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন প্রদান করা হয়। তবে কোনো কোনো প্রদর্শনে বেতনের পরিমাণ এর থেকেও বেশি হয়ে থাকে।

প্রতিমাসে এই নির্ধারিত বেতন ছাড়াও একজন শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ভাতা পেয়ে থাকেন। যার মধ্যে রয়েছে গ্র্যাচুইটি সুবিধা, দূরত্ব ভাতা ইত্যাদি। এমনকি চাকুরী জীবন শেষ করার পরে প্রভিডেন্ট ফান্ডের এককালীন টাকারও ব্যবস্থা রয়েছে। মেয়ে প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সাধারণত নিজ এলাকায় পোস্টিং হলেও ছেলে-প্রার্থীদের ক্ষেত্রে পোস্টিং কিছুটা দূরে হয়। আর এই দূরে পোস্টিং হওয়ার কারণে সাধারণত দূরত্ব  প্রদান করা হয়। যেটি বেতনের সাথে বাড়তি যোগ করা হয়।

আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন বিভিন্ন এনজিওর সহ গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষানবিশ কেন্দ্র ব্যবস্থাপকের কাজ কি। উত্তর পদে যোগদানের পর যোগ্যতা এবং দক্ষতার সাপেক্ষে ভবিষ্যতে প্রমোশনেরও সুযোগ রয়েছে। এর মাধ্যমে একজন প্রার্থী ভবিষ্যতে এরিয়া ম্যানেজার, জোনাল ম্যানেজার সহ প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদসমূহে নিয়োগ পেতে পারে। তবে তার জন্য অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। সেই সাথে এক এলাকায় কয়েক বছর চাকরির পর অন্য এলাকায় পোস্টিং নেওয়ার সুবিধা তো আছেই।