বাংলাদেশ ১২:২০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নামাজ পড়া অবস্থায় মোবাইলে কল এলে কি করবেন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৩২:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / ১৫ বার পড়া হয়েছে

নামাজ পড়া অবস্থায় মোবাইলে কল এলে

শুদ্ধভাবে নামাজ পড়ার জন্য মনোযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় নামাজ পড়া অবস্থায় মোবাইলে কল এলে কি করব ভেবে পাইনা। যারা বাসা বাড়িতে নামাজ পড়েন তাদের ক্ষেত্রে হয়তো বা পরিবারের অন্যান্য সদস্য ফোন বন্ধ করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। কিন্তু মসজিদে জামাতের সহিত নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে অন্যান্য মুসল্লিদের নামাজের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এই মোবাইল কলের রিংটোন বা শব্দ।এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে নামাজ পড়া অবস্থায় মোবাইল ফোন বন্ধ করা যাবে কিনা। কারণ ফোন যদি বারবার বাঁচতে থাকে তাহলে নামাজের মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। চলুন জেনে নেই এই ধরনের পরিস্থিতিতে কি করবেন।

নামাজ পড়া অবস্থায় মোবাইলে কল আসলে কি করা উচিত

বর্তমানে প্রতিটি মসজিদেই মোবাইল ফোন সাইলেন্ট কিংবা বন্ধ করার ব্যাপারে সতর্কবার্তা টানানো থাকে। তাই মসজিদে প্রবেশ করার পূর্বেই এটিকে বন্ধ করা বা সাইলেন্ট করে নেওয়া জরুরী। কিন্তু মাঝে মাঝে আমরা এই কাজটি করতে ভুলে যাই। এক্ষেত্রে নামাজ পড়া অবস্থায় মোবাইলে কল এলে তিন চার সেকেন্ডের সময়ের মধ্যে এক হাত দিয়ে সেটি বন্ধ করার অনুমতি রয়েছে। অর্থাৎ নামাজরত অবস্থায় আপনি চাপ দিয়ে ফোনটি বন্ধ করতে পারবেন। তবে এই মোবাইলটি বন্ধ করতে যদি অনেক বেশি সময় প্রয়োজন হয় তাহলে এর জন্য অনুমতি নেই। এক্ষেত্রে মোবাইল যদি প্যান্ট অথবা পায়জামার পকেটে থাকে তাহলে সেটি বের না করেই এক হাত দিয়ে দ্রুত বন্ধ করে আবার পকেটে রেখে দিবে।

(আহসানুল ফাতাওয়া: ৩/৪১৮, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/১০৫)

তবে সর্বাবস্থায় আমাদের এটি খেয়াল রাখা উচিত যেন মসজিদে প্রবেশের পূর্বে সেটি সাইলেন্ট বা বন্ধ করা।

নামাজ অবস্থায় বায়ু আসলে করনীয় কি

আলেমগণের মতে যদি নামাজ অবস্থায় বায়ু বের হয়ে আসে তাহলে পুনরায় অজু করে নামাজে যোগ দেওয়াই নিয়ম। যদিও আমাদের সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় এ ধরনের প্র্যাকটিস বা কালচার সমাজে গড়ে উঠে নি, তাই অনেকেই বিষয়টিকে খারাপ ভাবে দেখে থাকে। এমনকি এই ধরনের পরিস্থিতিতে মানুষ অনেক বেশি লজ্জা বোধ করে, উঠে না গিয়ে নামাজের অভিনয় করতে থাকে। তবে পরবর্তীতে সে যদি ওযু করে আবার নামাজ পড়ে তাহলে সে কাফের হবে না তবে নিয়ম ভাঙ্গার কারণে তার গুনাহ হবে।

আর যদি মনে মনে সন্দেহ থাকে যেমন অজু ভেঙ্গে গেছে অথবা যায়নি। একবার মনে হচ্ছে যে আমার ওযু চলে গিয়েছে আবার কিছুক্ষণ পরেই মনে হচ্ছে যে আমার ওযু ঠিক আছে। এমন ভাবতে ভাবতে আমরা অনেক সময় নামাজ সম্পন্ন করে ফেলি। এক্ষেত্রে আমার গুনাহ হবে কিনা কিংবা ঈমান চলে যাবে কিনা?

এটি নিঃসন্দেহে সন্দেহ ওয়াস ওয়াসা। এই ধরনের কার্যকলাপের পেছনে থাকে শয়তান। কারণ তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈমানদার এবং মুমিন বান্দাদেরকে কষ্ট দেওয়া এবং পেরেশানি দেওয়া। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে বেশি বেশি মহান আল্লাহ তায়ালার জিকির করা ও আশ্রয় প্রার্থনা করা প্রয়োজন। আলেমগণ উপদেশ দিয়ে থাকেন যে নামাজের মধ্য এ ধরনের সন্দেহের দেখে কোনভাবেই ভ্রুক্ষেপ না করা। যখনই এই বিষয়গুলো অপেক্ষা করতে পারবেন তো তখনই ক্ষতি হতে বেঁচে যাবেন।

আশা করি এখন আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে নামাজ অবস্থায় মোবাইলে কল আসলে করনীয় এবং পেছন দিয়ে বায়ু বের হলে বা সন্দেহ হলে কি করবেন। মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে সঠিক এবং সহীহভাবে নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন আমিন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

নামাজ পড়া অবস্থায় মোবাইলে কল এলে কি করবেন

আপডেট সময় : ০৬:৩২:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

শুদ্ধভাবে নামাজ পড়ার জন্য মনোযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় নামাজ পড়া অবস্থায় মোবাইলে কল এলে কি করব ভেবে পাইনা। যারা বাসা বাড়িতে নামাজ পড়েন তাদের ক্ষেত্রে হয়তো বা পরিবারের অন্যান্য সদস্য ফোন বন্ধ করার সুযোগ পেয়ে থাকেন। কিন্তু মসজিদে জামাতের সহিত নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে অন্যান্য মুসল্লিদের নামাজের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এই মোবাইল কলের রিংটোন বা শব্দ।এখন প্রশ্ন হচ্ছে যে নামাজ পড়া অবস্থায় মোবাইল ফোন বন্ধ করা যাবে কিনা। কারণ ফোন যদি বারবার বাঁচতে থাকে তাহলে নামাজের মনোযোগ নষ্ট হতে পারে। চলুন জেনে নেই এই ধরনের পরিস্থিতিতে কি করবেন।

নামাজ পড়া অবস্থায় মোবাইলে কল আসলে কি করা উচিত

বর্তমানে প্রতিটি মসজিদেই মোবাইল ফোন সাইলেন্ট কিংবা বন্ধ করার ব্যাপারে সতর্কবার্তা টানানো থাকে। তাই মসজিদে প্রবেশ করার পূর্বেই এটিকে বন্ধ করা বা সাইলেন্ট করে নেওয়া জরুরী। কিন্তু মাঝে মাঝে আমরা এই কাজটি করতে ভুলে যাই। এক্ষেত্রে নামাজ পড়া অবস্থায় মোবাইলে কল এলে তিন চার সেকেন্ডের সময়ের মধ্যে এক হাত দিয়ে সেটি বন্ধ করার অনুমতি রয়েছে। অর্থাৎ নামাজরত অবস্থায় আপনি চাপ দিয়ে ফোনটি বন্ধ করতে পারবেন। তবে এই মোবাইলটি বন্ধ করতে যদি অনেক বেশি সময় প্রয়োজন হয় তাহলে এর জন্য অনুমতি নেই। এক্ষেত্রে মোবাইল যদি প্যান্ট অথবা পায়জামার পকেটে থাকে তাহলে সেটি বের না করেই এক হাত দিয়ে দ্রুত বন্ধ করে আবার পকেটে রেখে দিবে।

(আহসানুল ফাতাওয়া: ৩/৪১৮, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/১০৫)

তবে সর্বাবস্থায় আমাদের এটি খেয়াল রাখা উচিত যেন মসজিদে প্রবেশের পূর্বে সেটি সাইলেন্ট বা বন্ধ করা।

নামাজ অবস্থায় বায়ু আসলে করনীয় কি

আলেমগণের মতে যদি নামাজ অবস্থায় বায়ু বের হয়ে আসে তাহলে পুনরায় অজু করে নামাজে যোগ দেওয়াই নিয়ম। যদিও আমাদের সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় এ ধরনের প্র্যাকটিস বা কালচার সমাজে গড়ে উঠে নি, তাই অনেকেই বিষয়টিকে খারাপ ভাবে দেখে থাকে। এমনকি এই ধরনের পরিস্থিতিতে মানুষ অনেক বেশি লজ্জা বোধ করে, উঠে না গিয়ে নামাজের অভিনয় করতে থাকে। তবে পরবর্তীতে সে যদি ওযু করে আবার নামাজ পড়ে তাহলে সে কাফের হবে না তবে নিয়ম ভাঙ্গার কারণে তার গুনাহ হবে।

আর যদি মনে মনে সন্দেহ থাকে যেমন অজু ভেঙ্গে গেছে অথবা যায়নি। একবার মনে হচ্ছে যে আমার ওযু চলে গিয়েছে আবার কিছুক্ষণ পরেই মনে হচ্ছে যে আমার ওযু ঠিক আছে। এমন ভাবতে ভাবতে আমরা অনেক সময় নামাজ সম্পন্ন করে ফেলি। এক্ষেত্রে আমার গুনাহ হবে কিনা কিংবা ঈমান চলে যাবে কিনা?

এটি নিঃসন্দেহে সন্দেহ ওয়াস ওয়াসা। এই ধরনের কার্যকলাপের পেছনে থাকে শয়তান। কারণ তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈমানদার এবং মুমিন বান্দাদেরকে কষ্ট দেওয়া এবং পেরেশানি দেওয়া। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পেতে বেশি বেশি মহান আল্লাহ তায়ালার জিকির করা ও আশ্রয় প্রার্থনা করা প্রয়োজন। আলেমগণ উপদেশ দিয়ে থাকেন যে নামাজের মধ্য এ ধরনের সন্দেহের দেখে কোনভাবেই ভ্রুক্ষেপ না করা। যখনই এই বিষয়গুলো অপেক্ষা করতে পারবেন তো তখনই ক্ষতি হতে বেঁচে যাবেন।

আশা করি এখন আপনারা বুঝতে পেরেছেন যে নামাজ অবস্থায় মোবাইলে কল আসলে করনীয় এবং পেছন দিয়ে বায়ু বের হলে বা সন্দেহ হলে কি করবেন। মহান আল্লাহ তা’আলা আমাদের সবাইকে সঠিক এবং সহীহভাবে নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুন আমিন।